বাচ্চারা সাধারণত স্কুল হলিডে পছন্দ করে, তবে, বাড়িতে সময় কাটাতে বাধ্য করা কিছু বাচ্চার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। দিনের বেলায় বাড়িতে থাকা শিশুরা তাদের রুটিনে, তাদের শেখার পরিকল্পনায়, ব্যায়ামের ধরণে এবং এমনকি তাদের খাদ্যাভ্যাসেও বিভিন্ন স্তরে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

সবাই বাড়িতে থাকলে রুটিন বজায় রাখা সমস্যাজনক হয়ে ওঠে। যদিও, আপনার বাচ্চারা সুস্থ ও সুপুষ্ট থাকবে, সে জন্য চেষ্টা করা এবং নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

  • হাতে-পায়ে পরিচ্ছন্নতা এবং সামাজিক দূরত্বের গুরুত্ব মেনে চলার ক্ষেত্রে ক্লান্তি নিয়ে আসবেন না। হাত ধোয়ার সাথে গেম খেলার কথা বিবেচনা করুন – ইচ্ছে হলে তারা তাদের হাত ধোয়ার মোট সংখ্যা গণনা করতে পারে এবং প্রতিবার তারা একটি মাইলফলক স্পর্শ করে উদযাপন করতে পারে!
  • যদিও হাতের স্বাস্থ্যবিধি গুরুত্বপূর্ণ, তবে অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন যে আপনার বাচ্চাদের স্বাস্থ্য এবং পুষ্টির জন্য একটি সামগ্রিক পদ্ধতির প্রয়োজন, বিশেষ করে যখন তাদের রুটিনগুলি ব্যাহত হয়। হলিডের মতো ছুটির ক্ষেত্রে নিয়ম এদিক-ওদিক হলেও হতে পারে, কিন্তু হলিডে নয় এমন দিনগুলিতে অনুশীলন ও খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার সন্তানের নিয়মিত, চেনা-জানা রুটিন মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের রুটিন আপনার বাচ্চাকে নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের অনুভূতি প্রদান করবে।
  • আপনার শিশুর দিনকে একঘেয়ে করা এড়িয়ে চলার জন্য রুটিনে কিছুটা নমনীয়তা গড়ে তুলুন। মূল বিষয়টা হল, একটা পূর্বাভাসযোগ্য সময়সীমার দরুণ যে-আশ্বাস আসে এবং তাদের নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করার স্বাধীনতা রয়েছে, সেটার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা। শিশুদের ভালো খাওয়ার জন্য রুটিন মেনে চলাও গুরুত্বপূর্ণ। রুটিনে সংশ্লিষ্ট থাকার অভ্যাস আপনার শিশুকে ভাল এবং নিয়মিত সময়ে খেতে সাহায্য করবে। ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার এবং প্রতিদিনের স্ন্যাক্সের জন্য আপনি আপনার পরিবারকে প্রতিদিন সময় দিচ্ছেন কিনা, তা নিশ্চিত করুন। এগুলি থেকে বিচ্যুত না হওয়াই ভাল, না হলে আপনি আপনার সন্তানের রুটিন এবং ক্ষুধাকে অস্থির করতে পারেন।
  • জাঙ্ক ফুড খাওয়ানো এড়িয়ে চলুন! আপনার সন্তানকে চিরাচরিত খাবার এবং খাদ্যশস্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এটাই দুর্দান্ত সময়। তাদের খাবার তৈরিতে সঙ্গে নিন, কিচেনের নির্দিষ্ট কাজ করতে দিন এবং খাবার তৈরিতে কাজে লাগান। এটি তাদের লক্ষ্য দেবে, শারীরিক কার্যকলাপ প্রদান করবে এবং পরবর্তী খাবারের জন্য তাদের ক্ষুধা মেটাতে সাহায্য করবে!
  • আপনার সন্তানকে বিভিন্ন উপায়ে প্লেটে খাবার পরিবেশনের বিষয়ে ভাবতে বলুন। এটি তাকে তার সৃজনশীলতা অনুশীলন করতে এবং আপনি বাড়িতে তৈরি করা খাবারের প্রতি আরও বেশি আগ্রহী হওয়ার সুযোগ দেয়।
  • মনে রাখার মতো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপনার সন্তানের ব্যায়াম করার প্রয়োজনীয়তা। শারীরিক এবং মানসিকভাবে সক্রিয় থাকা এবং ক্ষুধা মেটাতে কাজ করার জন্য এটি তার পক্ষে অত্যাবশ্যক যাতে সে ভাল খেতে পারে। যেহেতু তারা বাইরে যেতে পারে না, তাই বাড়িতে একটি প্রতিবন্ধক কোর্স তৈরি করা, ল্যাপ চালানো, দড়ি লাফানো, হুলা হুপ ব্যবহার করা বা সম্ভবত একটি ডান্স পার্টি করার কথা বিবেচনা করুন! একটি ব্যাট বা র‍্যাকেট ও একটি বল যেকোনো বাড়িকে খেলার মাঠে রূপান্তর করার জন্য যথেষ্ট!
  • যদিও বাইরে যাওয়া একটি চ্যালেঞ্জ, তবে নিশ্চিত করুন যে ভিটামিন D-এর দৈনিক ডোজ পেতে আপনার শিশু যেন অন্তত 30 মিনিট বারান্দায় বা সূর্যালোক জানালার কাছে ব্যয় করে। নিশ্চিত হন যে সে যেন ভিটামিন D [হাইপারলিংক]-এর সমৃদ্ধ ডোজ সহ খাবার খাওয়া চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে এই বয়সে যখন আপনার সন্তান দ্রুত বাড়তে থাকে তখন তার শক্ত হাড়ের বিকাশ চালিয়ে যাওয়ার জন্য এটি অত্যাবশ্যক।
  • কম শারীরিক পরিশ্রমে এবং বাড়িতে থাকার ফলে প্রায়শই জল খাওয়া কমে যায়। নিশ্চিত করুন যে আপনার বাচ্চারা যেন প্রতিদিন পর্যাপ্ত জল পান করে। প্রতি কয়েক ঘণ্টা অন্তর তাদের মধ্যে স্কুলের বোতল থেকে জল চুমুক দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাদের প্রস্রাবের রং হালকা হলে আপনি বুঝতে পারবেন তাদের পর্যাপ্ত জল পান করে। অন্যদিকে ধারণাটি হল তাদের একটি রুটিনে নিয়ে যাওয়া যাতে শারীরিক কার্যকলাপ অন্তর্গত।
  • সামাজিকভাবে সম্পর্কিত থাকা আপনার সন্তানদের রুটিনের অনুভূতি প্রদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে ফোনালাপ করার সময়সূচি তৈরি করুন, আপনার সন্তানরা যেন এই ফোনালাপগুলোর জন্য তাদের ঘরগুলো সাজিয়ে রাখে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখে, এইভাবে তারা সক্রিয় থাকতে পারে।

আপনার সন্তানকে সুস্থ রাখা শুধু কি খাচ্ছে তার উপর নির্ভর করে না, পাশাপাশি খাবার খাওয়ার মাঝে তারা কি করছে তার উপরও নির্ভর করে। একটি নিয়মিত রুটিন এবং শারীরিক ক্রিয়াকলাপ আপনার বাচ্চাদের খিদে এবং আগ্রহের সাথে তাদের খাবার উপভোগ করতে এবং ভালভাবে পুষ্ট থাকতে সাহায্য করবে।